ভুল রিপোর্ট দিয়ে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন শাজাহান খানের মেয়ে এবং ইংল্যান্ডের কোভেস্ট্রি বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্রী ঐশী খান।
ঐশী খান তার লিখিত অভিযোগে জানান, আমি ইংল্যান্ডের কোভেস্ট্রি বিশ^বিদ্যলয়ের একজন ছাত্রী, গত ২০ ফেব্রুয়ারী ইংল্যান্ড থেকে দেশে আসার পর করোনা পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে ইংল্যান্ড যাওয়া সম্ভব হয়নি। পুনরায় আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ চালু হলে আমি ২৬ জুলাই বেলা ১১টা ৪০মিনিটে ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল। দেশের বাহিরে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য কোভিড-১৯ টেস্ট এর নেগেটিভ রিপোর্ট আবশ্যিক। সে লক্ষ্যে আমি সরকার নির্ধারিত ঢাকার মহাখালী ডি এন সি সি করোনা আইসোলেশন সেন্টারে গত ২৪ জুলাই স্যাম্পল প্রদান করি এবং ২৫ জুলাই বিকাল ৪টায় অনলাইনে আমার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে দেখতে পাই। আমার কাজিন ও আমার পিতার ব্যাক্তিগত সহকারী সৈয়দ মমসাদউজ্জামান ডিএনসিসিএর করোনা আইসোলেশন সেন্টারে হাজির হয়ে টেস্ট রিপোর্ট সংগ্রহ করে, সেখানেও আমার কোভিট টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
সেই মোতাবেক আমি ২৬ জুলাই ইংল্যাান্ডে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমান বন্দরে হাজির হয়ে লাগেজ বুকিং দিয়ে ইমিগ্রেশন চেক করার মুহুর্তে তারা আমাকে জানায় যে, অনলাইনে আমার করোনা টেস্ট রিপোর্ট পজেটিভ।
আমার কোন করোনা লক্ষণ ছিল না, রিপোর্টও নেগেটিভ হওয়ায় আমি আমার পরিবারের সকলের সাথে স্বাভাবিক চলাফেরা করেছি। আমার পিতা সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, ৭ বারের নির্বাচিত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খানের সাথে একই গাড়ীতে বাসা থেকে বিমান বন্দরে যাতায়াত করেছি। যার ফলে আমার পিতাও করোনা ঝুঁকির মধ্যে থাকবেন বলে আমিসহ পরিবার দুশ্চিন্তাগ্রস্থ আছি। তাছাড়া আমার এই রিপোর্ট নিয়ে ইতিমধ্যে আমার বাবা সম্পর্কে বিভিন্ন মিডিয়াতে নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার হওয়ায় আমার পিতার সম্মানহানি হয়েছে। যা অমার্জনীয় অপরাধ।
ঐশী খান আরও বলেন, এই ধরনের ভুল রিপোর্ট প্রদান সম্পর্কে সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ী ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা এবং ভবিষ্যতে যাতে এর ধরনের মানুষকে অযথা হয়রানী হতে না হয় তার জন্য অতিসত্তর ব্যবস্থা গ্রহন করা যেন হয়।
এ ব্যাপারে ঐশী খানে চাচাতো ভাই ও সৈয়দ মমসাদউজ্জামান জানান, এই করোনা রিপোর্টের প্রতিটি মুহুর্তে আমি প্রতক্ষদর্শী, করোনা রিপোর্ট পজেটিভ হলে কেন নেগেটিভ দেয়া হয়েছে। আর কেনইবা এতো সংবাদ প্রচার, আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে শাজাহান খান ফোনে জানান, আমি এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করে এসেছি। এছাড়া ওই হসপিটাল থেকে এ ব্যাপারে তাদের দেয়া নেগটিভ রিপোর্ট ভুল হয়েছে সেটা স্বীকার করেছে। তবে করোনা রিপোর্ট পজেটিভ ছিল। আমি তাদের বলেছি তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে যে সংবাদ প্রচার হয়েছে এর দায়ভার কে নেবে? তখন তারা বলছে তারা এই বিষয় প্রেসনোট করবেন। এছাড়া ঢাকার ল্যাবএইড হাসাপতালে গতকাল আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর করোনা রিপোর্ট এসেছে পজেটিভ তবে আজ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় আবার রিপোর্ট এসেছে নেগেটিভ। এখন কোন রিপোর্ট আমরা বিশ^াস করবো। এই যদি হয় স্বাস্থ্য বিভাগের অবস্থা।
ন্যাশনাল ইউনিস্টিউট অফ ল্যাবরেটরি মেডিসিন এন্ড রেফারেন্স সেন্টার (এনইএলএমআরএস) এর পরিচালক অধ্যাপক আবুল খায়ের সামসুজ্জামান ফোনে জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে ভূল একটি রিপোর্ট সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রীর মেয়ের কাছে গিয়েছিল, এটা আমাদের ভুল হয়েছে। তাই আমাদের পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করেছি। এবং এই ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করবো।
